ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর সমাজ সংস্কারকের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমাজসংস্কারকের কাজে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-৯১ খ্রি.) নাম শ্রদ্ধর সঙ্গে স্মরণীয় প্রচলিত অর্থে একজন সাধারণ সংস্কৃত পণ্ডিত হয়েও সমাজ-সচেতন ও মানবতাবাদী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন বঙ্গীয় নবজাগরণের এক জ্বলন্ত প্রতিমূর্তি। উনিশ শতকের ধর্মীয় বিবাদ-বিসম্বাদ দিনে করুণাসাগর’ বিদ্যাসাগর বুদ্ধদেবের মতে ধর্ম বা ঈশ্বর। নিয়ে মাথা ঘামাননি—মানুষই ছিল তাঁর কাছে মুখ্য, আর এই মানুষের মুক্তির জন্যই তিনি। আজীবন সংগ্রাম করে যান। ধুতি-চাদর ও তালতলার চটি-পরিহিত এই তেজস্বী ব্রাহ্মণের মধ্যে নবজাগরণের প্রবল যুক্তিবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রগাঢ় মানবতাবােধ এবং প্রাচ্য-পাশ্চাত্যভাবাদর্শের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল।
শিক্ষাসংস্থার: ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হয়ে তিনি শিক্ষা সংস্কারের কাজে ব্রতী হন। 2) পূর্বে কেবলমাত্র ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য সন্তানরাই সংস্কৃত কলেজের ছাত্র হতে পারত। বিদ্যাসাগর এই প্রথা রদ করে সংস্কৃত কলেজের দ্বার সকল বর্ণের হিন্দু ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। পূর্বে অধ্যাপকদের কলেজে আসাযাওয়া ও অধ্যাপনার ব্যাপারে কোনাে নিয়মকানুন ছিল না। তারা যখন খুশি আসতেন ও চলে যেতেন।বিদ্যাসাগর সেখানে নিয়ম শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা প্রবর্তন করেন। (৩) পূর্বে সংস্কৃত কলেজে।হিন্দু তিথি ও শুভদিন অনুসারে ছুটি দেওয়া হত।বিদ্যাসাগর সে প্রথা তুলে দিয়ে রবিবার ছুটিরনিয়ম প্রবর্তন করেন। (৪) সংস্কৃত কলেজের পাঠক্রম তিনি ব্যাপক পরিবর্তন ঘটান। ইংরেজি।শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। সংস্কৃত পণ্ডিত হয়েও তিনি সাংখ্য ও বেদান্তকে ভ্রান্তদর্শন’ বলে।অভিহিত করে পাঠ্যসূচি থেকে সেগুলি বাদ দেন। মিল-এর তর্কশাস্ত্র পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত
শিক্ষাসংস্থার: ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হয়ে তিনি শিক্ষা সংস্কারের কাজে ব্রতী হন। 2) পূর্বে কেবলমাত্র ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য সন্তানরাই সংস্কৃত কলেজের ছাত্র হতে পারত। বিদ্যাসাগর এই প্রথা রদ করে সংস্কৃত কলেজের দ্বার সকল বর্ণের হিন্দু ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। পূর্বে অধ্যাপকদের কলেজে আসাযাওয়া ও অধ্যাপনার ব্যাপারে কোনাে নিয়মকানুন ছিল না। তারা যখন খুশি আসতেন ও চলে যেতেন।বিদ্যাসাগর সেখানে নিয়ম শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা প্রবর্তন করেন। (৩) পূর্বে সংস্কৃত কলেজে।হিন্দু তিথি ও শুভদিন অনুসারে ছুটি দেওয়া হত।বিদ্যাসাগর সে প্রথা তুলে দিয়ে রবিবার ছুটিরনিয়ম প্রবর্তন করেন। (৪) সংস্কৃত কলেজের পাঠক্রম তিনি ব্যাপক পরিবর্তন ঘটান। ইংরেজি।শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। সংস্কৃত পণ্ডিত হয়েও তিনি সাংখ্য ও বেদান্তকে ভ্রান্তদর্শন’ বলে।অভিহিত করে পাঠ্যসূচি থেকে সেগুলি বাদ দেন। মিল-এর তর্কশাস্ত্র পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমাজসংস্কারকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
গণিত শিক্ষার জন্য লীলাবতী ও বীজগণিত বাদ দিয়ে ইংরেজি গণিত গ্রন্থ পাঠে ব্যবস্থা করেন। সংস্কৃত ব্যাকরণ হিসেবে ‘মর্থবােধ’ অসম্পূর্ণ ও ভ্রান্ত বলে তিনি তা বাতিল করেন এবং বাংলার মাধ্যমে সহজে সংস্কৃত শিক্ষার জন্য 'সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্লমণিকাও ব্যাকরণ কৌমুদী রচনা করেন।
শিক্ষা বিস্তার: জনশিক্ষা বিস্তারের কাজেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে, শিক্ষাই অন্ধকার দূর করে মানুষকে প্রকৃত মুনষ্যত্বে পৌঁছেদেয়। লর্ড হার্ডিঞ্চের সহযােগিতায় তিনি বাংলার বিভিন্ন স্থানে গ্রামাঞ্চলে বহু বিদ্যালয় স্থাপনকরেন। এগুলির মধ্যে ৩৩টি স্থায়ী হয় বাংলার বিভিন্ন
জেলায় তিনি ২০টি মডেল স্কুল বা আদর্শ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এগুলির মধ্যে অনেকগুলিই তিনি নিজ ব্যয়েচালাতেন তিনি উপলব্ধি করেন যে, শিক্ষা ব্যতীত নারী সমাজের মুক্তি নেই। এ কারণে তিনি স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারেউদ্যোগী হন। ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে কি ওয়াটার বেগুনের পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।বিদ্যাসাগর এই শিক্ষায়তনের সম্পাদকের পদ গ্রহণ করেন।তার উদ্যোগে বাংলার গ্রামাঞ্চলে ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয়প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলিতে প্রায় ১৩০০ ছাত্রী পড়াশােনা করত।
(৪) তার অন্যতম কৃতিত্ব হল মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন| প্রতিষ্ঠা। পরে এটি কলেজে উন্নীত হয়। বর্তমানে এর নাম ।বিদ্যাসাগর কলেজ। দেশীয় অধ্যাপক মন্ডলী দ্বারা পরিচালিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমাজসংস্কারকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
বিদ্যাসাগর প্রমাণ করেন যে, ভারতীয় অধ্যাপক ইংরেজ অধ্যাপকের তুলনায় কোনাে অংশে কেবলমাত্র শিক্ষা বিস্তার নয়—বিরাট পাণ্ডিত্য সত্ত্বেও তিনি জন শিক্ষার জন্যবেশ কিছু পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন। এগুলোর মধ্যে বর্ণমালা, কথামালা বোঝায়উল্লেখযোগ্য। এক কথায়, বাংলায় জনশিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও স্ত্রী শিক্ষা বিস্তার এবং বাংলা গদ্যের
.বিধবাবিবাহ: বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ রোধ এবং বিধবা বিবাহ প্রবর্তনের জন্য।আন্দোলন এ নামেন এবং বিভিন্ন ধর্ম শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তার মতামতের যৌক্তিকতা।দর্শন করেন। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত সর্বশুভকরী সভা'র মুখপত্র 'সর্বশুভকরী।একা'র প্রথম সংখ্যাতেই তিনি বাল্যবিবাহের দোষ’ শীর্ষক এক প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। হিন্দু।বিধবার দুঃসহ জীবন তাকে প্রচন্ড ব্যথিত করে। তিনি হিন্দুশাস্ত্র বিশেষত ‘পরাশরহাত থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করেন যে বিধবা বিবাহ শাস্ত্র সম্মত। বিধবা বিবাহের পক্ষে।ন দেশে এক প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিধবাবিবাহ প্রচলিত। ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে পুস্তিকা দুটি ইংরাজী অনুবাদ প্রকাশিত হয়। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা অক্টোবর ভারতীয় আইনসভারদের কাছে বিধবা বিবাহ আইন সিদ্ধ করার জন্য এক হাজার ব্যক্তির স্বাক্ষর-সংবলিত আবেদন পত্র পাঠানাে হয়।