Tuesday, November 26, 2019

পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদীর বিবরণ,ঋতুচক্রের এবং পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য | west bengal rivers

প্রশ্ন : পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি অঞ্লের ভূ-প্রকৃতির বিবরণ দাও।


উঃ পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পশ্চিম অংশে ছােট নাগপুর মালভূমির অংশ বিশেষ হিসাবে ই মালভূমি টি  অবস্থান করছে। অবস্থান ও পুরুলিয়া জেলা, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, মেদিনীপুর জেলার পশ্চিম অংশ  নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের এই মালভূমি অঞ্চলটি গঠিত হয়েছে।
ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য : অর্কিয়ান  যুগের প্রাচীন রূপান্তরিত শিলা ও কার্বনিফেরাস গের কয়লার স্তর সহ বেলে পাথর, কাদাপাথর, কোয়ার্টজাইট শিলাস্তর দ্বারা এটি গঠিত।

প্রধান পাহাড় সমূহ : এই অংশে অবস্থিত উল্লেখযােগ্য পাহাড়গুলির মধ্যে অযােধ্যা,বাঘমুন্ডি, বিহারীনাথ, শুশুনিয়া, মামা ভাগ্নে প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। অযোধ্যা পাহাড়ের গর্গা বুরুর উচ্চতা ৬৭৭ মিটার যা সমগ্র মালভূমি অঞ্চলের মধ্যে উচ্চতম।।

পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদীর বিবরণ দাও।

উঃ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বহু সংখ্যক নদ-নদী প্রবাহিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদী গুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলাে—
উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলের নদ-নদী:পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে অবস্থিত পার্বত্য অঞ্চল বরাবর যে সব নদীগুলি প্রবাহিত হয়েছে,গুলি হলাে —
(১) তিস্তা ও সিকিমের জেমু হিমবাহ থেকে উৎপন্ন এই নদীটি পশ্চিমবঙ্গের পর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে যমুনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। রঙ্গিত এর প্রধান

(২) জলঢাকা ও সিকিম-ভুটান সীমান্ত থেকে উৎপন্ন এই নদীটি জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যমুনা নদীতে পতিত হয়েছে।
(৩) মহানন্দা এই নদীটি উত্তর দিনাজপুর পশ্চিম সীমান্ত ও মালদহ জেলার মধ্য দিয়ে বাহিত হয়ে বাংলাদেশে পদ্মা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। পুনর্ভবা ও আত্রাই এই দুটি-এর প্রধান উপনদী।

(৪) অন্যান্য : তাের্সা, রায়ডাক, সংকোচ প্রভৃতি পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য প্রধান
 মালভূমি অঞ্চলের নদ-নদী ও

মালভূমি অঞ্চলের উপর দিয়ে যে সব নদী প্রবাহিত হয়েছে সেগুলি হল—

(১) দামোদর ঝাড়খণ্ডের ছোটনাগপুর মালভূমি কামারপাত পাহাড় থেকে উৎপন্ন নদীটি পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হুগলী নদীতে মিলিত হয়েছে।
(২) অজয় ও ছোটনাগপুর মালভূমি থেকে উৎপন্ন এই নদীটি বীরভূম ও বর্ধমান। যার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভাগীরথী মিশেছে।।
(৩) অন্যান্য ও অন্যান্য নদীগুলির মধ্যে রূপনারায়ন, কংসাবতী, দ্বারকেশ্বর, ময়ূরাক্ষী নদী গুলি প্রধান।

সমভূমি অঞলের নদী : ।

সমভূমি অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত উল্লেখযােগ্য নদীগুলি হল—

১) গঙ্গা ও এই নদীটি হিমালয়ে গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়ে দীর্ঘ পথ। প্রবাহিত হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার গিরিয়ার কাছে দুটি ধারায় বিভক্ত হয়েছে। একটি অংশ পদ্মা নামে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ও অপরটি ভাগীরথী-হুগলী নামে। পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।।
| ২) অন্যান্য : পশ্চিমবঙ্গের সর্ব দক্ষিণে বিশেষ করে সুন্দরবন এলাকায় পিয়ালি, । মাতলা, গোসাবা, সপ্তমুখী, ইছামতী প্রভৃতি নদীগুলো প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীগুলো । প্রত্যেকটি পরস্পর, পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত ও এগুলি জোয়ারের জলে পুষ্ট।

পশ্চিমবঙ্গের সারা বছর কী কী ঋতুর আর্বিভাব লক্ষ্য করা যায় ? অথবা, পশ্চিমবঙ্গের ঋতুচক্রের বিবরণ দাও।


উঃ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে সারা বছর ধরে বিভিন্ন ঋতুর পর্যায়ক্রমিক আবর্তন লক্ষ্য করা যায়। প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু উ য় ও আর্দ্র ক্রান্তীয় মৌসুমী প্রকৃতির।

১) গ্রীষ্মকাল মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সময়ে পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্রই উত্তাপ বাড়তে থাকে। মালভূমি অঞ্চলে উত্তাপের পরিমাণ সবচেয়ে বেশী থাকে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে ৩৬ সেলসিয়াস উত্তাপ পরিলক্ষিত হলেও এপ্রিলের শেষ দিকে ৪০° সেলসিয়াস থেকে ৪২ সেলসিয়াস পর্যন্ত উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। এই সময় কলকাতার ৪০° সেলসিয়াস, আসানসোল ৪৫° সেলসিয়াস, জলপাইগুড়ি ও সাগরদ্বীপে ৩৫° সেলসিয়াস ও দার্জিলিং এ  ২০° সেলসিয়াস উত্তাপ অনুভূত হয়।

২) বর্ষাকাল ও জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ ভাগ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা ঋতুর আগমন লক্ষ্য করা যায়। দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমীবায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখার প্রভাবে রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়, গড়ে ১৫৫ সেমি মত। পার্বত্য অংশে বৃষ্টিপাতের গড় পরিমাণ প্রায় ৩০০ সেমি এর মতাে।

৩) শরৎকাল অক্টোবরের প্রথম থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে শরৎ ঋতু বিরাজ করে।।

৪) শীতকাল ও ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র শীতকালীন আবহাওয়া পরিলক্ষিত হয়। পার্বত্য অঞ্চল বাদে অন্যান্য এলাকায় গড় তাপমাত্রা ১৩০। সেন্টিগ্রেড থেকে ১৯° সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত লক্ষ্য করা যায়। দার্জিলিং এর পার্বত্য এলাকায়
কখন কখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায়।