ভারতীয় জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে গান্ধিজির আবির্ভাব নতুন অধ্যায়: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, কারণ এই বছরেই মহাত্মা গান্বি জাতীয়।কংগ্রেস তথা ভারতীয় জাতীয় মুক্তি-আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর আগমনে ভারতীয় রাজনীতি এক নতুন রূপ পরিগ্রহ করে। (১) রাজনীতিকে তিনি ইংরেজি শিক্ষিত মধ্যবিত্তের।বৈঠকখানা থেকে দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকের দীন-কুটির, কৃষিক্ষেত্র ও কলকারখানায় দেন এবং তিনি তাদের কাছের মানুষে পরিণত হন। (২) তিনিই হলেন প্রথম ভারতীয় যিনি জাতীয় মুক্তি-সংগ্রামে জনগণের ও গণ-প্রতিরােধে ভূমিকা উপলদ্ধি করেন। তিনি ভারতীয় জনগণের বিভিন্নগােষ্ঠী, যথা শ্রমিক, কৃষক, পুজিপতি, ছাত্র, আইনজীবী অন্যান্য বৃত্তিজীবী গােষ্ঠী এবং মহিলাদের একত্রিত কর।
ভারতীয় মুক্তি-আন্দোলনকে যথার্থ জাতীয় আন্দোলন ও গণ আন্দোলনে পরিণত করেন। পূর্ববর্তী নেতৃবৃন্দের মতাে তিনি তাঁর কর্মপ্রয়াস কেবলমাত্র আইন সংগত বা সাংবিধানিক আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি-সরকারের বিরধেতিনি প্রত্যক্ষ সংগ্রাম শুরু করেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় জনসাধারণ নির্ভীক দেশ প্রেমিকে পরিণত হয়।গান্ধিজি তারা অকুতােভয়ে ইংরেজ সরকারের লাঠি ও গুলিরমােকাবিলা করে। তার প্রভাবেই ব্রিটিশ শাসন সম্পর্কেজনমনে প্রবল ঘৃণার সঞ্চার হয় এবং দেশবাসী স্বরাজ লাভের উদগ্র বাসনায় উদবেগ হয়েওঠে। জওহরলাল নেহরু তাঁর আত্মজীবনীতে বলেছেন যে, গান্ধি-চিন্তার সার কথা হল ।অভয়'। (ও) বিপ্লবীদের সঙ্গেও তাঁর আদর্শগত পার্থক্য ছিল। তিনি অহিংস সত্যাগ্রহে"বিশ্বাসী ছিলেন হিংসায় নয়। তার সহজসরল অনাড়ম্বর পােশাক-পরিচ্ছদ,
জীবনযাত্রা,ইংরেজি অপেক্ষা দেশীয় ভাষার প্রতি আকর্ষণ সাধসলভ মাধর্য সত্যনিষ্ঠা ও ধর্মীয় গ্রন্থ
প্রতি আগ্রহ ভারতীয় জনসাধারণ এবং আদর্শবাদী তরণ মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের তার প্রাত আকৃষ্ট করে। (৪) কেবলমাত্র ইংরেজদের রাজনৈতিক অধীনতা থেকে মুক্তিলাভ করাই নয়দেশবাসীকে সর্বপ্রকার শােষণ ও নিপীড়নের হাত থেকে মুক্ত করাই ছিল তার ব্রত। তিনি উপলব্ধি করেন যে, দরিদ্র নিরন্ন গ্রামবাসী ও মহামারী-কবলিত হতশ্রী গ্রামগুলিতেই ভারতের প্রাণশক্তি নিহিত আছে। তাই তাঁর কাছে গ্রামবাসীর দুঃখদুর্দশা মােচনের দাবিই হল ভারতের প্রকৃত দাবি। (৫) হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পক্ষে ও অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম নারীর সামাজিক মর্যাদার উন্নয়ন, মাদক বর্জন, চরকা ও খাদির মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুউদ্দার ও বুনিয়াদি শিক্ষার আদর্শ তাঁকে সকলের চোখে মহিমান্বিত করে তােলে।
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে আমৃত্যু তিনিই ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও ওগুজরাটের পোরবন্দর এক নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব পরিবারে জন্ম গ্রহণ করে , দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধী: মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ২রা।গুজরাট এর পোর বন্দরে এক নিষ্ঠাবান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মা পুতলি বাঈছিলেন ধর্মপরায়ণা মহিলা এবং পিতা কাবা গান্ধীর বেশ কিছু পার্সি ও মুসলিম বন্ধু ছিলেন।
। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি লন্ডনে যান এবং ১৮৯১খ্রিস্টাব্দে ব্যারিস্টারি পাস।তে ফিরে আসেন। বোম্বে হাইকোর্ট ও গুজরাটের রাজকোটে তিনি কিছুদিন আইন,ব্যাবসা করেন, কিন্তু তাতে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ২৪ বছর সার উদ্দেশ্যে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নাটালে যাত্রা করেন এবং সেখানেই রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত হয়। জীবিকার অন্বেষণে প্রায় দশ হাজার ভারতীয় শ্রমিক ব্যবসায়ী দক্ষিণ আফ্রিকায় বাস করতেন। বর্ণবৈষম্যের কারণে এই অঞ্চলে বসবাসকারী ভারতীয়দের কোন নাগরিক অধিকার ছিল না এবং দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতা সরকার তাদের অত্যাচার চালাত—গান্ধিজি নিজেও একাধিবার এই ধরনের অত্যাচারের শিকার।হন। এই অশলে বসবাসকারী ভারতীয়দের অধবর্বর এশীয়’বলে অভিহিত করা হত।
তাদেরকোন ভোটাধিকার ছিল না, তাদের প্রত্যেককে পৃথকভাবে সরকারের কাছে নাম নথিভুক্তকরতে হত এবং বিশেষ এক ধরনের কর দিতে হত। তাদের কোনাে ভালাে জায়গায় বসবাসেরঅধিকার ছিল না—ঘিঞ্জি ও অস্বাস্থ্যকর এলাকায় তাদের বাস করতে হত, ফুটপাথ-এর ওপর।দিয়ে তাদের হাঁটার অধিকার ছিল না—এমনকি রাত্রি ন'টার পরে তাদের ঘরের বাইরে যাওয়ার।আইন ছিল না। এ ছাড়া, পরবর্তীকালে ভারতীয়দের ওপর আরও অপমানজনক নানা ধরনেরবিধিনিষেধ আরোপিত হয়
এই অনাচার দূর করার উদ্দেশ্যে গান্ধীজি ভারতীয়দের সংঘবদ্ধ করে নাটাল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস'গঠন করেন এবং সম্পূর্ণ অহিংস পথে সেখানে একআন্দোলনের সূচনা করেন। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের চাপে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে সরকার ইন্ডিয়ানরিলিফ আইন' ('Indian Relief Act') পাস করলে গান্ধিজি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।বলা বাহুল্য, সম্পূর্ণ অহিংস উপায়ে পরিচালিত এই আন্দোলনে শক্তিশালী শাসকের বিরুদ্ধে।তিনি জয়যুক্ত হন এবং তাঁর অহিংস কর্মপন্থা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক হাতিয়ার বলেস্বীকৃত হয়। গান্ধিজি পরিচালিত এই আন্দোলনের নাম সত্যাগ্রহ'।।গান্ধিজির ভারতীয় রাজনীতিতে যোগদান: ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ছেচল্লিশ বছর করর্সে বিজয়ী বীররূপে গান্ধিজি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন।সঙ্গে সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হননি। তাঁর রাজনৈতিক গুরু গােপালকৃয়। গােখলের পরামর্শে তিনি এই সময় ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করে ভারতীয় সমাজ,জনজীবন ও রাজনীতি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সচেষ্ট হন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে।
ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধিজির ভূমিকা
ভারতীয় মুক্তি-আন্দোলনকে যথার্থ জাতীয় আন্দোলন ও গণ আন্দোলনে পরিণত করেন। পূর্ববর্তী নেতৃবৃন্দের মতাে তিনি তাঁর কর্মপ্রয়াস কেবলমাত্র আইন সংগত বা সাংবিধানিক আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি-সরকারের বিরধেতিনি প্রত্যক্ষ সংগ্রাম শুরু করেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় জনসাধারণ নির্ভীক দেশ প্রেমিকে পরিণত হয়।গান্ধিজি তারা অকুতােভয়ে ইংরেজ সরকারের লাঠি ও গুলিরমােকাবিলা করে। তার প্রভাবেই ব্রিটিশ শাসন সম্পর্কেজনমনে প্রবল ঘৃণার সঞ্চার হয় এবং দেশবাসী স্বরাজ লাভের উদগ্র বাসনায় উদবেগ হয়েওঠে। জওহরলাল নেহরু তাঁর আত্মজীবনীতে বলেছেন যে, গান্ধি-চিন্তার সার কথা হল ।অভয়'। (ও) বিপ্লবীদের সঙ্গেও তাঁর আদর্শগত পার্থক্য ছিল। তিনি অহিংস সত্যাগ্রহে"বিশ্বাসী ছিলেন হিংসায় নয়। তার সহজসরল অনাড়ম্বর পােশাক-পরিচ্ছদ,
জীবনযাত্রা,ইংরেজি অপেক্ষা দেশীয় ভাষার প্রতি আকর্ষণ সাধসলভ মাধর্য সত্যনিষ্ঠা ও ধর্মীয় গ্রন্থ
প্রতি আগ্রহ ভারতীয় জনসাধারণ এবং আদর্শবাদী তরণ মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের তার প্রাত আকৃষ্ট করে। (৪) কেবলমাত্র ইংরেজদের রাজনৈতিক অধীনতা থেকে মুক্তিলাভ করাই নয়দেশবাসীকে সর্বপ্রকার শােষণ ও নিপীড়নের হাত থেকে মুক্ত করাই ছিল তার ব্রত। তিনি উপলব্ধি করেন যে, দরিদ্র নিরন্ন গ্রামবাসী ও মহামারী-কবলিত হতশ্রী গ্রামগুলিতেই ভারতের প্রাণশক্তি নিহিত আছে। তাই তাঁর কাছে গ্রামবাসীর দুঃখদুর্দশা মােচনের দাবিই হল ভারতের প্রকৃত দাবি। (৫) হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পক্ষে ও অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম নারীর সামাজিক মর্যাদার উন্নয়ন, মাদক বর্জন, চরকা ও খাদির মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুউদ্দার ও বুনিয়াদি শিক্ষার আদর্শ তাঁকে সকলের চোখে মহিমান্বিত করে তােলে।
ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধিজির ভূমিকা
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে আমৃত্যু তিনিই ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও ওগুজরাটের পোরবন্দর এক নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব পরিবারে জন্ম গ্রহণ করে , দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধী: মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ২রা।গুজরাট এর পোর বন্দরে এক নিষ্ঠাবান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মা পুতলি বাঈছিলেন ধর্মপরায়ণা মহিলা এবং পিতা কাবা গান্ধীর বেশ কিছু পার্সি ও মুসলিম বন্ধু ছিলেন।
। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি লন্ডনে যান এবং ১৮৯১খ্রিস্টাব্দে ব্যারিস্টারি পাস।তে ফিরে আসেন। বোম্বে হাইকোর্ট ও গুজরাটের রাজকোটে তিনি কিছুদিন আইন,ব্যাবসা করেন, কিন্তু তাতে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ২৪ বছর সার উদ্দেশ্যে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নাটালে যাত্রা করেন এবং সেখানেই রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত হয়। জীবিকার অন্বেষণে প্রায় দশ হাজার ভারতীয় শ্রমিক ব্যবসায়ী দক্ষিণ আফ্রিকায় বাস করতেন। বর্ণবৈষম্যের কারণে এই অঞ্চলে বসবাসকারী ভারতীয়দের কোন নাগরিক অধিকার ছিল না এবং দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতা সরকার তাদের অত্যাচার চালাত—গান্ধিজি নিজেও একাধিবার এই ধরনের অত্যাচারের শিকার।হন। এই অশলে বসবাসকারী ভারতীয়দের অধবর্বর এশীয়’বলে অভিহিত করা হত।
ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধিজির ভূমিকা
তাদেরকোন ভোটাধিকার ছিল না, তাদের প্রত্যেককে পৃথকভাবে সরকারের কাছে নাম নথিভুক্তকরতে হত এবং বিশেষ এক ধরনের কর দিতে হত। তাদের কোনাে ভালাে জায়গায় বসবাসেরঅধিকার ছিল না—ঘিঞ্জি ও অস্বাস্থ্যকর এলাকায় তাদের বাস করতে হত, ফুটপাথ-এর ওপর।দিয়ে তাদের হাঁটার অধিকার ছিল না—এমনকি রাত্রি ন'টার পরে তাদের ঘরের বাইরে যাওয়ার।আইন ছিল না। এ ছাড়া, পরবর্তীকালে ভারতীয়দের ওপর আরও অপমানজনক নানা ধরনেরবিধিনিষেধ আরোপিত হয়
এই অনাচার দূর করার উদ্দেশ্যে গান্ধীজি ভারতীয়দের সংঘবদ্ধ করে নাটাল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস'গঠন করেন এবং সম্পূর্ণ অহিংস পথে সেখানে একআন্দোলনের সূচনা করেন। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের চাপে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে সরকার ইন্ডিয়ানরিলিফ আইন' ('Indian Relief Act') পাস করলে গান্ধিজি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।বলা বাহুল্য, সম্পূর্ণ অহিংস উপায়ে পরিচালিত এই আন্দোলনে শক্তিশালী শাসকের বিরুদ্ধে।তিনি জয়যুক্ত হন এবং তাঁর অহিংস কর্মপন্থা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক হাতিয়ার বলেস্বীকৃত হয়। গান্ধিজি পরিচালিত এই আন্দোলনের নাম সত্যাগ্রহ'।।গান্ধিজির ভারতীয় রাজনীতিতে যোগদান: ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ছেচল্লিশ বছর করর্সে বিজয়ী বীররূপে গান্ধিজি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন।সঙ্গে সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হননি। তাঁর রাজনৈতিক গুরু গােপালকৃয়। গােখলের পরামর্শে তিনি এই সময় ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করে ভারতীয় সমাজ,জনজীবন ও রাজনীতি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সচেষ্ট হন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে।