Saturday, November 30, 2019

রাজা রামমোহন রায় এর জীবনী ও তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান | Raja Ram Mohon Roy Biography

রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩ খ্রি.) ছিলেন ভারতীয় নবজাগরণের অগ্রদূত। তাকে  ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ’, আধুনিক ভারতের জনকপ্রভৃতি অভিধায় ভূষিত করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে ‘ভারত পথিক বলে সম্মান জানিয়েছেন। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর মতে তিনি হলেন ভারতীয় জাতীয়তাবাদের 'জনক। অনেকে তাকে বলেছেন ‘আধুনিক ভারতের ইরাসমাস। আজ আমাদের সাহিত্য, ধর্ম,শিক্ষা, বিজ্ঞান, সমাজ নীতি, রাষ্ট্রনীতি—যাকে আমরা আধুনিক বলি না কেন, রামমােহন।হলেন তার অগ্রদূত।


রাজা রামমোহন রায় এর জীবনী ও তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান 



বহুমুখী প্রতিভা: ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৭৭৪ খ্রি.) হুগলি জেলার  এক রক্ষণশীল ও ধনী ব্রাহ্মণ পরিবারে তার জন্ম হয়। অসাধারণ ধী-শক্তি ও  খুব অল্প বয়সে তিনি আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত ভাষা এবং হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ খ্রিস্টান প্রভৃতি বিভিন্ন ধর্ম শাস্ত্রে অসাধারণ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন।পরবর্তীকালে হিব্রু, ফরাসি ও ইংরেজি ভাষায় জ্ঞান, বিভিন্ন হিন্দু-মুসলিম সন্ন্যাসীর সান্নিধ্য এবং  লক, হিউম, ভলতেয়ার, নিউটন, পেইন প্রমুখ মনীষীর চিন্তাধারার। তাঁর আন্তরিক পরিচয় তাকে একজন মুক্তমনাযুক্তিবাদী ও মানবতাবাদীতে পরিণত করে  আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং ফরাসি বিপ্লবের আদর্শের দ্বারা তিনি গভীরভাবে প্রভাবিত হন। তিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সমন্বয়ে নবভারত গঠনের আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রাচ্য ও প্রতীচ্য ভাবধারার সমন্বয়ের প্রতীক।

ধর্ম সংস্কার: প্রচলিত আচার-অনুষ্ঠানসর্বস্ব পৌত্তলিক হিন্দু ধর্মে, নানা কুসংস্কার,লােকাচার এবং পুরােহিতম্ভেৱ স্বৈরাচারী ও মূঢ় আচরণে তিনি মর্মাহত হন। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থপাঠের ফলে তিনি একেশ্বরবাদী নিরাকার ব্রহ্ম বাদের সমর্থক হয়ে ওঠেন। তিনি বেদ-উপনিষদ প্রভৃতি গ্রন্থের ব্যাখ্যা করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, পৌত্তলিকতা, পুরােহিততন্ত্র, লোকাচার বা অনুষ্ঠান সরস্বতী হিন্দু ধর্মের মূল কথা নয়।হিন্দুশাস্ত্র মতে নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং একেশ্বরবাদ হল সকল ধর্মের মূল কথা। ১৮০৩ খ্রিষ্টাব্দে বহুদেববাদের বিরুদ্ধে এবং একেশ্বরবাদের সমর্থনে ফারসি ভাষায় তিনি একটি পুস্তিকা রচনা করেন তার নাম ‘তুহফৎউল-মুয়াহিদ্দিন’বা একেশ্বরবাদীদের প্রতি। কেবলমাত্র তাই নয়—তিনি বাংলা ভাষায় বেদান্ত ভাষ্য রচনা করেন এবং ঈশ কঠ, কেন, মণ্ডুক, 'মাণ্ডুক্য প্রভৃতি পাঁচটি প্রধান

রাজা রামমোহন রায় এর জীবনী ও তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান 


রাজা রামমোহন রায় উপনিষদ বাংলা অনুবাদ করেন তিনি তার মতবাদ প্রচারে ব্রতী হন। তার ধর্মমত সম্পর্কে আলোচনার জন্য ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতায় তাঁর বন্ধু  ও অনুগামীদের নিয়ে আত্মীয় সভা’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সভার সদস্যদের মধ্যে উল্লেকযোগ্য ছিলেন দ্বারকানাথ ঠাকুর, প্রসন্ন কুমার ঠাকুর, নন্দকিশোর বসু, রামচন্দ্র  প্রমুখ ব্যক্তি।।  সামাজিক সমস্যাবলী আলোচিত হতো। পরবর্তীকালে একেশ্বরবাদ প্রচারের জন্য খ্রিস্টাব্দ (মতান্তরে ১৮২৯ খ্রি.) তিনি(ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীকালেব্রহ্ম খ্রি.) নাম ধারণ করে এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল পৌত্তলিকতা
পরিহার  করে নিরাকার পরম ব্রত্মের উপাসনা। বেদান্ত ছিল তাঁর ধর্মসাধনার মূল ভিত্তি।।এভাবে তিনি কেবলমাত্র যথার্থ  হিন্দুধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠাই করেননি, খ্রিস্টান মিশনারিদের আক্রমণের হাত থেকে হিন্দু ধর্মকে রক্ষা করেছেন। ব্রাহ্মসমাজ ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান  হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—সকল ধর্মের মানুষের জন্যই এর দ্বার উন্মুক্ত ছিল।

সমাজ সংস্কার: রামমোহনের সংস্কার মুক্ত যুক্তিবাদী মন হিন্দু সমাজে প্রচলিত।বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, কন্যাপণ, কৌলিন্য প্রথা, জাতিভেদ, অস্পৃশ্যতা, গঙ্গাসাগরে নিক্ষেপ প্রভাতী বহুবিধ সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। এগুলি নিবারণের জন্য তিনি সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রতিবাদে সোচ্চার হন। (১) ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দ থেকেই তিনি সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন এবং জনমত গঠনে ব্রতী হন। এই উদ্দেশ্যে তিনি বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিভিন্ন পুস্তিকা এবং (সম্বাদ কৌমুদী পত্রিকার বিভিন্ন প্রবন্ধ প্রকাশকরেন। হিন্দুশাস্ত্র ও বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে তিনি প্রমাণ করেন যে, সতীদাহ ধর্মবিরুদ্ধ ওঅশাস্ত্রীয়। এই কুপ্রথা নিবারণের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বাংলার বিশিষ্ট নাগরিকদের স্বাক্ষরিত এক আবেদনপত্র বড়ােলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের কাছে জমা দেন। রামমােহনের সক্রিয় সমর্থন ও সহযোগিতা গভর্নর জেনারেল বেন্টিঙ্ক এক আইনের মাধ্যমে 'সতীদাহ প্রথা। নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেন (৪ঠা ডিসেম্বর, ১৮২৯ খ্রি.)। কেবলমাত্র প্রচলিত এই কুপ্রথার হাত থেকে নারীর জীবন রক্ষায় নয়, মর্যাদা সহকারে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টাও তিনি। করেন। (২) তিনি নারী পুরুষ সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা, বিধবা বিবাহ প্রচলন, স্ত্রীশিক্ষা বিস্তার এবং বাল্যবিবাহ ও পুরুষের বহুবিবাহ রদ করা প্রভৃতি ব্যাপারে উদ্যোগী হন। (৩) হিন্দু নারীর দায়াধিকার সম্পর্কে তিনিই প্রথম মতামত ব্যক্ত করেন।

রাজা রামমোহন রায় এর জীবনী ও তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান 


 শিক্ষা সংস্কারক: তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন।তিনি মনে করতেন যে, আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার ওপর ভিত্তি করেই নবভারত গড়ে উঠবে।(১) হিন্দু কলেজ (১৮১৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠার সঙ্গে তিনি কতটা যুক্ত ছিলেন তা বিতর্কের বিষয়,কিন্তু তিনি নিজ ব্যয়ে কলকাতায় একটি ইংরেজি বিদ্যালয় পরিচালনা করতেন। (২) ডেভিডহেয়ার শিক্ষা বিস্তারের কাজে তিনি অন্যতম প্রধান সহায়ক ছিলেন। (৩) হেয়ারের বিদ্যালয়ও রামমোহন প্রতিষ্ঠিত বেদান্ত কলেজ’পাশ্চাত্য সমাজবিজ্ঞান ও পদার্থবিদ্যা শিক্ষা দেওয়া হত। (৪) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড অমিহাষ্ট্রকে লিখিত এক পত্রে তিনি ভারতবর্ষে গণিত,প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, রসায়ন, অস্থিবিদ্যা ও পাশ্চাত্য দর্শন শিক্ষা দেওয়ার দাবি জানান। তাঁরলিখিত পত্রটি ভারতীয় নবজাগরণের ইতিহাসে এক মূল্যবান দলিল (৫) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে স্কটিশ মিশনারি আলেকজান্ডার ডাফ কলকাতা জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশনপ্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হলে রামমোহন ছিলেন তার প্রধান সহায়ক।

অন্যান্য সংস্কার: রাজা রামমোহন রায়কে নিঃসন্দেহে ভারতীয় রাজনৈতিকআন্দোলন ও ভারতীয় সাংবাদিকতার অগ্রদূত এবং বাংলা গদ্যের জনক বলা যায়।(১) হিন্দুধর্ম সংস্কার এবং একেশ্বরবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি বেশ কিছু পুস্তিকা এবং বিভিন্নউপনিষদের বাংলাঅনুবাদ প্রকাশ করেন। এর ফলে বাংলা গদ্য সাহিত্যের বিকাশ ঘটে। তার বেদান্ত গ্রন্থ ও 'গৌড়ীয় ব্যাকরণ’অতি উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ। (২) তিনি বাংলা ভাষায় 'সম্বাদ কৌমুদী (১৮২১ খ্রি.) এবং ফার্সিতে মিরাৎ-উল-আখবর (১৮২২ খ্রি.) নামে সংবাদপত্রপ্রকাশ করেন। ১৮২৩ খ্রিষ্টাব্দে সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করতে উদ্যোগী হলে তিনি সুপ্রিম কোর্ট এবং ইংল্যান্ডের সপার্ষদ রাজার কাছে স্মারকলিপি পাঠান এবং এক আন্দোলন গড়েতােলেন। (৩) তিনি কৃষকদের দুর্দশা মানে যত্নবান হন এবং জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। (৪) কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যাধিকার, দেশীয় পণ্যের ওপর অধিক শুল্ক আরোপ, বিচার বিভাগীয় দুর্নীতি, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত এবং ভারতবাসীর প্রতি ইংরেজ রাজকর্মচারীদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এর বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ জানান। (৫) তিনি। সরকারি উচ্চ পদগুলো ও সমর বিভাগের ভারতীয়করণ, প্রশাসন ও বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ,জরি প্রথার প্রবর্তন প্রয়োগের দাবি জানা,প্রবর্তন এবং বিচারের ক্ষেত্রে ভারতীয় ও ইউরোপীয় নির্বিশেষে এই আইনজানান। বিপিনচন্দ্র পাল রামমোহনকে ভারতের রাজনৈতিক পুনরুজ্জীবনের ('Father of political regeneration of India') বলে অভিহিত করেছেন।

রাজা রামমোহন রায় এর জীবনী ও তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান 


 আন্তর্জাতিকতা: আন্তর্জাতিকতা আদর্শে বিশ্বাসী ও মানবতাবাদী রামমোহন সকল দেশ ও জাতির মুক্তির আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। (১) ফরাসি বিপ্লব ও আমেরিকার  সংগ্রাম তাকে গভীরভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিল। (২) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের জুলাই বিপ্লবের সাফল্য তিনি অভিভূত হন। (৩) স্পেন, পোর্তুগাল, দক্ষিণ আমেরিকা ও আইরিশ সংগ্রামের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন ছিল। (৪) অপরদিকে ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে নেপলস-এর বিপ্লব ব্যর্থ হলে তিনি অত্যন্ত দুঃখিত হন।
|মূল্যায়ন: (i) সীমাবদ্ধতা : রামমােহনের কৃতিত্বের মূল্যায়ন নিয়ে পণ্ডিত ও সুধীমহল নানা পরস্পর-বিরোধী মতামত প্রচলিত আছে। তার জীবদ্দশাতেই অনেকে তাঁর বিরদ্ধে তীব্র বিষাদগার  করেছেন। ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার ধর্ম, সমাজ, শিক্ষা ও আধুনিকতারঅগ্রদূত হিসেবে রামমােহনের সকল কৃতিত্বকে অস্বীকার করেছেন। 

মার্কিন ঐতিহাসিক ডেভিডশতকের নবজাগরণ কোনাে ব্যক্তিবিশেষের অবদান নয়। তাঁর জীবন ও কর্মে নানা স্ববিরােধিতাদেখা যায়। তাঁর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে বলা হয় যে, (১) হিন্দুধর্মের কুসংস্কার, পৌত্তলিকতা,সতীদাহ প্রথা প্রভৃতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা  করলেও, তিনি কিন্তু জাতিভেদ প্রথা বাবহুবিবাহের বিরুদ্ধে সেভাবে রুখে দাঁড়াননি। তিনি কখনােই ব্রাক্ষ্মণের উপবীত ত্যাগ করেননি।বিলাত-যাত্রাকে সঙ্গে ব্রাহ্মণ পাচক নিতে বলেছেন এবং তার ব্রা সমাজে’ ব্রাত্মণ ব্যতীতঅপর কেউ আচার্য হতে পারতেন না। (২) ইংরেজি শিক্ষাবিস্তারের পক্ষে বলতে গিয়ে সংস্কৃত ভাষা ও দেশীয় শিক্ষার প্রতি তিনি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন। (৩) ইংরেজি শিক্ষাবিস্তারের পাশাপাশি যে দেশীয় শিক্ষা ও মাতৃভাষা প্রসারের প্রয়োজন তা তিনি উপলদ্ধি করেননি। (৪) চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত-জনিত কারণে কৃষকদের দুরবস্থার প্রতি সহানুভূতিশীল হলেও,জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি কিন্তু কিছুই বলেননি। (৫) তার অতিরিক্ত ইংরেজ ও ইংরেজি শিক্ষা প্রীতির জন্য অনেকে তার জাতীয়তা-বিরোধী বলে মনে করেন।


(ii) কৃতিত্ব : এই বিরূপ সমালোচনা সত্ত্বেও তাকে নিঃসন্দেহে ‘নবভারতের।অগ্রদূত হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। কিশোরী চাঁদ মিত্র, প্যারীচাঁদ মিত্র, আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাত্মা গান্ধি—সকলেই তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন। বিশ্বকবিরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাকে ভারত পথিক’ বলে অভিহিত করেছেন। অধ্যাপক দিলীপ কুমার বিশ্বাস তাকে বলেছেন ‘বিশ্বপথিক'। অধ্যাপক ম্যাক্সমুলারের মতে, রামমােহনই প্রথম প্রাচ্য ও।প্রতীচ্যের জীবন-তরঙ্গের মধ্যে সমন্বয়সাধন করেন। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, তিনি ছিলেন সমাজসংস্কারক বিপ্লবী নন। এ কারণেই তিনি প্রচলিত ধর্ম ও সকল সামাজিকরীতিনীতিকে বিসর্জন দিতে পারেননি। ড. সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, "He assumed the |role of a cautious reformer rather than a militant revolutionaryঠাকুরের মতে, ‘রামমোহন রায় ভারতের ইতিহাসে আধুনিক যুগের সূচনা করেন Ram mohan Roy inaugurated the Modern Age in India.আধুনিক ভারতের স্রষ্টা বলে অভিহিত করেছেন 

ডিরোজিওর জীবনী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা | derozio biography in bengali

সূচনা: বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে হিন্দু কলেজের 22 বছর বয়স্ক তরুণ শিক্ষক পর্তুগিজ বংশােদ্ভূত হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও এক অতি উল্লেখযোগ্য নাম। তার নেতৃত্বে কিছু আদর্শবাদী তরুণ হিন্দু ধর্ম ও সমাজের সকল শ্রদ্ধা হারিয়ে পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণের মাধ্যমে দেশে এক চরমপন্থী মতাদর্শ প্রচার তে থাকেন। তারুণ্যের তেজে উদ্দীপ্ত এই আন্দোলনের ফলে হিন্দুধর্ম ও সমাজের ভিত্তি কেপে ওঠে। এই আন্দোলন নবজারণ  আন্দোলন বা ইয়ংবেজ্গাল মুভমেন্ট নামে পরিচিত।

ডিরোজিওর জীবনী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা



শিক্ষক ডিরোজিও: এই আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ডিরােজিও-র জন্ম ১৮০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার এন্টালি অঞ্চলে এক ইঙ্গ-পোর্তুগিজ পরিবারে কবি, যুক্তিবাদী ওস্বাধীন চিন্তার পূজারী ডেভিড ড্রামন্ড ধর্মতলা একাডেমিতে তিনি শিক্ষা লাভ করেন। ডিরোজিওর ওপর তার প্রভাবছিল অসামান্য। ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে (১৮২৮ খ্রি.) মাত্র সতেরাে বছর বয়সে তিনি হিন্দু কলেজ ইংরেজি ও ইতিহাসের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তিনি ছিলেনউদীয়মান বাংলার এক প্রদীপ্ত প্রলয় শিখা। জাতীয়তার মন্ত্র গুরুরাজা রামমোহন ভারতীয় মহাযজ্ঞের সূচনা করেন, তিনি তাতে ঘৃতাহুতি দেন। যুক্তিবাদী ডিরোজিও বিনা বিচারে কিছুই মানতেন না এবং ছাত্রদেরও অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করে যুক্তিবাদি ও সত্যসন্ধানী হওয়ার পরামর্শ দিতেন। তিনি ছিলেন ছাত্রদের ডিরোজিও , বন্ধু ও পথপ্রদর্শক। তার চেষ্টায় ছাত্র লক, হিউম, বেকন,বার্কলে, রীড, টম পেইন, ভলতেয়ার, রুশো প্রমুখ দার্শনিক এবং ফরাসি বিপ্লবের চিন্তাধারারসঙ্গে পরিচিত হয়। সাধারণ অর্থে শ্রেণিকক্ষ বলতে আমরা যা বুঝি ডিরােজিও-র ক্লাস তা ছিল সেখানে সাহিত্য, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, দেশপ্রেম—সব কিছু নিয়ে অবাধ আলােচনা চলত।এর উদ্দেশ্য ছিল ছাত্রদের মধ্যে স্বাধীন চিন্তা ও যুক্তিবাদের উন্মেষ ঘটানো।

ডিরোজিওর জীবনী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা



 মতাদর্শ: ছাত্রদের মনে স্বাধীন চিন্তার বিকাশ ঘটানাের উদ্দেশ্যে ১৮২৭খ্রিস্টাব্দে ডিরোজিও মানিকতলায় ‘অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন' নামে এক বিতর্ক সভা।প্রতিষ্ঠা করেন। সম্ভবত এটিই ভারতের প্রথম ছাত্র সংগঠন। এখানে তার ছাত্ররা প্রচলিতঅর্থনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে স্বাধীন মতামত ব্যক্ত করত।জাতিভেদ প্রথা, অস্পৃশ্যতা, প্রতিমা পূজা, সতীদাহ ও প্রচলিত হিন্দুধর্ম ছিল তাঁদের আকমণেরমূল লক্ষ্য(এথেনিয়াম ছিল এই সংঘের মুখপত্র। ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁরা পার্থেনন নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। এতে স্ত্রীশিক্ষা, নারী স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সম্বন্ধেপ্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। ডিরোজিও-র উদ্যোগে প্রকাশিত (ক্যালেইডোস্কোপ' পত্রিকা ইংরেজশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়। তারা হিন্দু ধর্মের রক্ষণশীল তাঁকে তীব্রভাবে আক্রমণকরেন। তাঁরা নিষিদ্ধ মাংস ভক্ষণ করতেন, উপবীত ছিড়ে ফেলতেন, গঙ্গাজলের পবিত্রতা মানতেন না, ব্ৰায়ণ পুরােহিতদের লক্ষ্য করে বলতেন—“আমরা গােরু খাই গাে”, কালীঘাটের মন্দিরে মা কালীর উদ্দেশ্যে বলেন—::Good morning, Madam!" তার অনুগামীদের।হিন্দু ধর্ম অবলম্বী  সব মতামত ও কার্যকলাপে হিন্দু সমাজে প্রবল আলোড়ন দেখা দেয়।ফলে তিনি হিন্দু কলেজ থেকে পদচ্যুত হন। ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হয়।
কার্যকলাপ: পাের্তুগিজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও তিনি মনেপ্রাণে ভারতীয় ছিলেন। সম্ভবত ডিরােজিও-ই আধুনিক ভারতবর্ষের প্রথম জাতীয়তাবাদী কবি। তার রচিত“ফকির অব জঙ্গিরা’ ও ‘স্বদেশের প্রতি ('To My Country') কবিতায় দেশাত্মবােধ ফুটেউঠেছে। তিনি ও তার অনুগামীরা মাতৃভূমি ভারতবর্ষ গভীরভাবে ভালোবাসতে ভারতীয়সভ্যতা ও সংস্কৃতি একান্তভাবে গ্রহণ করতে পারেননি। তাদের কালাপাহাড়ি মনোভাবেরজন্য দেশবাসীও তাঁদের গ্রহণ করেনি। ডিরােজিও-র মৃত্যুতে তার আদর্শ লুপ্ত হয়নি—তিনিস্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ইয়ং বেঙ্গল' নামে একদল অনুগামী রেখে যান


ডিরোজিওর জীবনী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা


। ভারতীয় নবজাগরণেরইতিহাসে তাঁরা সকলেই বিশিষ্ট স্থানাধিকারী। তাঁদের মধ্যে কৃতি মোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রামগোপাল ঘোষ, প্যারীচাঁদ মিত্র, রামতনু লাহিড়ী, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, রসিককৃয় মপ্লিক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তারা জ্ঞানান্বেষণ' ‘এনকোয়ারার ‘বেঙ্গল স্পেকটেটর ‘হিন্দ পাইওনিয়ার নামে পত্রিকা এবং সাধারণ জ্ঞানোপার্জিকা সভা' নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা - করেন। রাজনৈতিক কার্য পরিচালনার জন্য ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁরা ‘বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি' প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁরা খ্রিস্টান পাদ্রীদের গোঁড়ামি, স্ত্রী পুরুষের অ-সমানাধিকার, দাসপ্রথা, নারীর নির্যাতন, সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণ বিধি, মরিশাসে ভারতীয় কুলি প্রেরণ, ভারতীয় বিচার ও পুলিশ ব্যবস্থা, বেগার খাটানো, একচেটিয়া বাণিজ্যাধিকার, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত এবং অন্যান্য সামাজিক, ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক কুসংস্কার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।

" ব্যর্থতা। এই আন্দোলনের ব্যর্থতার নানা কারণ ছিল। (১) তাঁদের কোনাে গঠনমূলক কর্মসূচি ছিল না তাদের সব চিন্তাধারাই ছিল নেতিবাচক। তাঁরা যে কী চান, তা-ই তাঁরা ঠিকমতাে জানতেন না। হিন্দুধর্ম বা পাশ্চাত্য সভ্যতা কোনােটি সম্পর্কেই তাঁদেরকোনো স্বচ্ছ ধারণা ছিল না। হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে সব কিছু না জেনেই তারা তার নিন্দায় সােচ্চার হয়েছিলেন। এর ফলে হিন্দু সমাজে ত্রাসের সঞ্চার হয়। এই আন্দোলনের পশ্চাতে কোনাে ছিল না। (২) এই আন্দোলন কিছু শহুরে তরুণ বুদ্ধিজীবী মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তারা বক্তৃতা ও পুস্তিকার মধ্যে তাদের আন্দোলন চালাতেন। দেশের সাধারণ মানুষের। সঙ্গে এর কোনাে সম্পর্ক ছিল না। ড. অনিল শীল-এর মতে, তাঁরা গজদন্ড মিনারে বাস " 
মানুষের সমস্যাবলি সম্পর্কে তারা অবহিত ছিলেন না।চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন বা কুটিরশিল্প ধ্বংসের ফলে সৃষ্ট শোচনীয় আর্থিক দুর্দশা থেকে তাদের মুক্ত করার কোনাে পরিকল্পনা তারা গ্রহণ করেননি। (৪) মুসলিম সমাজের সঙ্গে এঁদের কোনাে সম্পর্ক ছিল না। (৫) ডিরোজিও-র মৃত্যুর পর প্রাথমিক উচ্ছাস স্তিমিত হলে তাদের অনেকেই চিরাচরিত। ঐতিহ্যের ক্রোড়ে আশ্রয় নেন। অনেকেই সরকারি চাকরি গ্রহণ করেন বা ব্যাবসায় মন দেন। হরচন্দ্র ঘোষ বাঁকুড়া সদর আমিন নিযুক্ত হন। গোবিন্দ চন্দ্র বসাক, রসিককৃষ্ণ মলিক ও । মাধব চন্দ্র মল্লিক ছিলেন ডেপুটি কালেক্টর। কিশোরী চাঁদ মিত্র ও শিবচন্দ্র দেব ছিলেন ডেপুটি। ম্যাজিস্ট্রেট। রাধানাথ শিকদার জরিপ দপ্তরে চাকরি নেন এবং হিমালয়ের উচ্চতা মেপে।বিখ্যাত হন। প্যারীচাঁদ মিত্র ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি-র সম্পাদক নিযুক্ত হন।দক্ষিণারন মুখোপাধ্যায় সরকার নানাভাবে সাহায্য করে অযোধ্যার তালুকদার পান এবং
১৮৭১-এ 'রাজা' উপাধি লাভ করেন।

Friday, November 29, 2019

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর সমাজ সংস্কারকের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা | ishwar chandra vidyasagar short biography in bengali

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর  সমাজ সংস্কারকের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা  


ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমাজসংস্কারকের কাজে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-৯১ খ্রি.) নাম শ্রদ্ধর সঙ্গে স্মরণীয় প্রচলিত অর্থে একজন সাধারণ সংস্কৃত পণ্ডিত হয়েও সমাজ-সচেতন ও মানবতাবাদী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন বঙ্গীয় নবজাগরণের এক জ্বলন্ত প্রতিমূর্তি। উনিশ শতকের ধর্মীয় বিবাদ-বিসম্বাদ দিনে করুণাসাগর’ বিদ্যাসাগর বুদ্ধদেবের মতে ধর্ম বা ঈশ্বর। নিয়ে মাথা ঘামাননি—মানুষই ছিল তাঁর কাছে মুখ্য, আর এই মানুষের মুক্তির জন্যই তিনি। আজীবন সংগ্রাম করে যান। ধুতি-চাদর ও তালতলার চটি-পরিহিত এই তেজস্বী ব্রাহ্মণের মধ্যে নবজাগরণের প্রবল যুক্তিবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রগাঢ় মানবতাবােধ এবং প্রাচ্য-পাশ্চাত্যভাবাদর্শের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল।


শিক্ষাসংস্থার: ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হয়ে তিনি শিক্ষা সংস্কারের কাজে ব্রতী হন। 2) পূর্বে কেবলমাত্র ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য সন্তানরাই সংস্কৃত কলেজের ছাত্র হতে পারত। বিদ্যাসাগর এই প্রথা রদ করে সংস্কৃত কলেজের দ্বার সকল বর্ণের হিন্দু ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। পূর্বে অধ্যাপকদের কলেজে আসাযাওয়া ও অধ্যাপনার ব্যাপারে কোনাে নিয়মকানুন ছিল না। তারা যখন খুশি আসতেন ও চলে যেতেন।বিদ্যাসাগর সেখানে নিয়ম শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা প্রবর্তন করেন। (৩) পূর্বে সংস্কৃত কলেজে।হিন্দু তিথি ও শুভদিন অনুসারে ছুটি দেওয়া হত।বিদ্যাসাগর সে প্রথা তুলে দিয়ে রবিবার ছুটিরনিয়ম প্রবর্তন করেন। (৪) সংস্কৃত কলেজের পাঠক্রম তিনি ব্যাপক পরিবর্তন ঘটান। ইংরেজি।শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। সংস্কৃত পণ্ডিত হয়েও তিনি সাংখ্য ও বেদান্তকে ভ্রান্তদর্শন’ বলে।অভিহিত করে পাঠ্যসূচি থেকে সেগুলি বাদ দেন। মিল-এর তর্কশাস্ত্র পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমাজসংস্কারকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা 


গণিত শিক্ষার জন্য লীলাবতী ও বীজগণিত বাদ দিয়ে ইংরেজি গণিত গ্রন্থ পাঠে ব্যবস্থা করেন। সংস্কৃত ব্যাকরণ হিসেবে ‘মর্থবােধ’ অসম্পূর্ণ ও ভ্রান্ত বলে তিনি তা বাতিল করেন এবং বাংলার মাধ্যমে সহজে সংস্কৃত শিক্ষার জন্য 'সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্লমণিকাও ব্যাকরণ কৌমুদী রচনা করেন।

শিক্ষা বিস্তার: জনশিক্ষা বিস্তারের কাজেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে, শিক্ষাই অন্ধকার দূর করে মানুষকে প্রকৃত মুনষ্যত্বে পৌঁছেদেয়। লর্ড হার্ডিঞ্চের সহযােগিতায় তিনি বাংলার বিভিন্ন স্থানে গ্রামাঞ্চলে বহু বিদ্যালয় স্থাপনকরেন। এগুলির মধ্যে ৩৩টি স্থায়ী হয় বাংলার বিভিন্ন
জেলায় তিনি ২০টি মডেল স্কুল বা আদর্শ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এগুলির মধ্যে অনেকগুলিই তিনি নিজ ব্যয়েচালাতেন তিনি উপলব্ধি করেন যে, শিক্ষা ব্যতীত  নারী সমাজের মুক্তি নেই। এ কারণে তিনি স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারেউদ্যোগী হন। ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে কি ওয়াটার বেগুনের পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।বিদ্যাসাগর এই শিক্ষায়তনের সম্পাদকের পদ গ্রহণ করেন।তার উদ্যোগে বাংলার গ্রামাঞ্চলে ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয়প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলিতে প্রায় ১৩০০ ছাত্রী পড়াশােনা করত।
(৪) তার অন্যতম কৃতিত্ব হল মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন| প্রতিষ্ঠা। পরে এটি কলেজে উন্নীত হয়। বর্তমানে এর নাম ।বিদ্যাসাগর কলেজ। দেশীয় অধ্যাপক মন্ডলী দ্বারা পরিচালিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমাজসংস্কারকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা 


বিদ্যাসাগর প্রমাণ করেন যে, ভারতীয় অধ্যাপক ইংরেজ অধ্যাপকের তুলনায় কোনাে অংশে কেবলমাত্র শিক্ষা বিস্তার নয়—বিরাট পাণ্ডিত্য সত্ত্বেও তিনি জন শিক্ষার জন্যবেশ কিছু পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন। এগুলোর মধ্যে বর্ণমালা, কথামালা বোঝায়উল্লেখযোগ্য। এক কথায়, বাংলায় জনশিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও স্ত্রী শিক্ষা বিস্তার এবং বাংলা গদ্যের

.বিধবাবিবাহ: বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ রোধ এবং বিধবা বিবাহ প্রবর্তনের জন্য।আন্দোলন এ  নামেন এবং বিভিন্ন ধর্ম শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তার মতামতের যৌক্তিকতা।দর্শন করেন। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত সর্বশুভকরী সভা'র মুখপত্র 'সর্বশুভকরী।একা'র প্রথম সংখ্যাতেই তিনি বাল্যবিবাহের দোষ’ শীর্ষক এক প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। হিন্দু।বিধবার দুঃসহ জীবন তাকে প্রচন্ড ব্যথিত করে। তিনি হিন্দুশাস্ত্র বিশেষত ‘পরাশরহাত থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করেন যে বিধবা বিবাহ শাস্ত্র সম্মত। বিধবা বিবাহের পক্ষে।ন দেশে এক প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিধবাবিবাহ প্রচলিত। ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে পুস্তিকা দুটি ইংরাজী  অনুবাদ প্রকাশিত হয়। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা অক্টোবর ভারতীয় আইনসভারদের কাছে বিধবা বিবাহ আইন সিদ্ধ করার জন্য এক হাজার ব্যক্তির স্বাক্ষর-সংবলিত আবেদন পত্র  পাঠানাে হয়।

Wednesday, November 27, 2019

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধিজির ভূমিকা | gandhi biography in bengali

ভারতীয় জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে গান্ধিজির আবির্ভাব নতুন অধ্যায়: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, কারণ এই বছরেই মহাত্মা গান্বি জাতীয়।কংগ্রেস তথা ভারতীয় জাতীয় মুক্তি-আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর আগমনে ভারতীয় রাজনীতি এক নতুন রূপ পরিগ্রহ করে। (১) রাজনীতিকে তিনি ইংরেজি শিক্ষিত মধ্যবিত্তের।বৈঠকখানা থেকে দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকের দীন-কুটির, কৃষিক্ষেত্র ও কলকারখানায় দেন এবং তিনি তাদের কাছের মানুষে পরিণত হন। (২) তিনিই হলেন প্রথম ভারতীয় যিনি জাতীয় মুক্তি-সংগ্রামে জনগণের ও গণ-প্রতিরােধে ভূমিকা উপলদ্ধি করেন। তিনি ভারতীয় জনগণের বিভিন্নগােষ্ঠী, যথা শ্রমিক, কৃষক, পুজিপতি, ছাত্র, আইনজীবী অন্যান্য বৃত্তিজীবী গােষ্ঠী এবং মহিলাদের একত্রিত কর।

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধিজির ভূমিকা 



ভারতীয় মুক্তি-আন্দোলনকে যথার্থ জাতীয় আন্দোলন ও গণ আন্দোলনে পরিণত করেন। পূর্ববর্তী নেতৃবৃন্দের মতাে তিনি তাঁর কর্মপ্রয়াস কেবলমাত্র আইন সংগত বা সাংবিধানিক আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি-সরকারের বিরধেতিনি প্রত্যক্ষ সংগ্রাম শুরু করেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় জনসাধারণ  নির্ভীক দেশ প্রেমিকে পরিণত হয়।গান্ধিজি তারা অকুতােভয়ে ইংরেজ সরকারের লাঠি ও গুলিরমােকাবিলা করে। তার প্রভাবেই ব্রিটিশ শাসন সম্পর্কেজনমনে প্রবল ঘৃণার সঞ্চার হয় এবং দেশবাসী স্বরাজ লাভের উদগ্র বাসনায় উদবেগ হয়েওঠে। জওহরলাল নেহরু তাঁর আত্মজীবনীতে বলেছেন যে, গান্ধি-চিন্তার সার কথা হল ।অভয়'। (ও) বিপ্লবীদের সঙ্গেও তাঁর আদর্শগত পার্থক্য ছিল। তিনি অহিংস সত্যাগ্রহে"বিশ্বাসী ছিলেন হিংসায় নয়। তার সহজসরল অনাড়ম্বর পােশাক-পরিচ্ছদ,
জীবনযাত্রা,ইংরেজি অপেক্ষা দেশীয় ভাষার প্রতি আকর্ষণ সাধসলভ মাধর্য সত্যনিষ্ঠা ও ধর্মীয় গ্রন্থ
প্রতি আগ্রহ ভারতীয় জনসাধারণ এবং আদর্শবাদী তরণ মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের তার প্রাত আকৃষ্ট করে। (৪) কেবলমাত্র ইংরেজদের রাজনৈতিক অধীনতা থেকে মুক্তিলাভ করাই নয়দেশবাসীকে সর্বপ্রকার শােষণ ও নিপীড়নের হাত থেকে মুক্ত করাই ছিল তার ব্রত। তিনি  উপলব্ধি করেন যে, দরিদ্র নিরন্ন গ্রামবাসী ও মহামারী-কবলিত হতশ্রী গ্রামগুলিতেই ভারতের প্রাণশক্তি নিহিত আছে। তাই তাঁর কাছে গ্রামবাসীর দুঃখদুর্দশা মােচনের দাবিই হল ভারতের  প্রকৃত দাবি। (৫) হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পক্ষে ও অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম  নারীর সামাজিক মর্যাদার উন্নয়ন, মাদক বর্জন, চরকা ও খাদির মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুউদ্দার  ও বুনিয়াদি শিক্ষার আদর্শ তাঁকে সকলের চোখে মহিমান্বিত করে তােলে।

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধিজির ভূমিকা 


১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে আমৃত্যু তিনিই ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও ওগুজরাটের পোরবন্দর এক নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব পরিবারে জন্ম গ্রহণ করে , দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধী: মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ২রা।গুজরাট এর পোর বন্দরে এক নিষ্ঠাবান  পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মা পুতলি বাঈছিলেন ধর্মপরায়ণা মহিলা এবং পিতা কাবা গান্ধীর বেশ কিছু পার্সি ও মুসলিম বন্ধু ছিলেন।
। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি লন্ডনে যান এবং ১৮৯১খ্রিস্টাব্দে ব্যারিস্টারি পাস।তে ফিরে আসেন। বোম্বে হাইকোর্ট ও গুজরাটের রাজকোটে তিনি কিছুদিন আইন,ব্যাবসা করেন, কিন্তু তাতে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ২৪ বছর সার উদ্দেশ্যে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নাটালে যাত্রা করেন এবং সেখানেই রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত হয়। জীবিকার অন্বেষণে প্রায় দশ হাজার ভারতীয় শ্রমিক ব্যবসায়ী দক্ষিণ আফ্রিকায় বাস করতেন। বর্ণবৈষম্যের কারণে এই অঞ্চলে বসবাসকারী ভারতীয়দের কোন নাগরিক অধিকার ছিল না এবং দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতা সরকার তাদের অত্যাচার চালাত—গান্ধিজি নিজেও একাধিবার এই ধরনের অত্যাচারের শিকার।হন। এই অশলে বসবাসকারী ভারতীয়দের অধবর্বর এশীয়’বলে অভিহিত করা হত।

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধিজির ভূমিকা 



 তাদেরকোন ভোটাধিকার ছিল না, তাদের প্রত্যেককে পৃথকভাবে সরকারের কাছে নাম নথিভুক্তকরতে হত এবং বিশেষ এক ধরনের কর দিতে হত। তাদের কোনাে ভালাে জায়গায় বসবাসেরঅধিকার ছিল না—ঘিঞ্জি ও অস্বাস্থ্যকর এলাকায় তাদের বাস করতে হত, ফুটপাথ-এর ওপর।দিয়ে তাদের হাঁটার অধিকার ছিল না—এমনকি রাত্রি ন'টার পরে তাদের ঘরের বাইরে যাওয়ার।আইন ছিল না। এ ছাড়া, পরবর্তীকালে ভারতীয়দের ওপর আরও অপমানজনক নানা ধরনেরবিধিনিষেধ আরোপিত হয়
 এই অনাচার দূর করার উদ্দেশ্যে গান্ধীজি ভারতীয়দের সংঘবদ্ধ করে নাটাল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস'গঠন করেন এবং সম্পূর্ণ অহিংস পথে সেখানে একআন্দোলনের সূচনা করেন। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের চাপে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে সরকার ইন্ডিয়ানরিলিফ আইন' ('Indian Relief Act') পাস করলে গান্ধিজি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।বলা বাহুল্য, সম্পূর্ণ অহিংস উপায়ে পরিচালিত এই আন্দোলনে শক্তিশালী শাসকের বিরুদ্ধে।তিনি জয়যুক্ত হন এবং তাঁর অহিংস কর্মপন্থা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক হাতিয়ার বলেস্বীকৃত হয়। গান্ধিজি পরিচালিত এই আন্দোলনের নাম সত্যাগ্রহ'।।গান্ধিজির ভারতীয় রাজনীতিতে যোগদান: ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ছেচল্লিশ বছর করর্সে বিজয়ী বীররূপে গান্ধিজি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন।সঙ্গে সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হননি। তাঁর রাজনৈতিক গুরু গােপালকৃয়। গােখলের পরামর্শে তিনি এই সময় ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করে ভারতীয় সমাজ,জনজীবন ও রাজনীতি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সচেষ্ট হন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে।

Tuesday, November 26, 2019

পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদীর বিবরণ,ঋতুচক্রের এবং পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য | west bengal rivers

প্রশ্ন : পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি অঞ্লের ভূ-প্রকৃতির বিবরণ দাও।


উঃ পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পশ্চিম অংশে ছােট নাগপুর মালভূমির অংশ বিশেষ হিসাবে ই মালভূমি টি  অবস্থান করছে। অবস্থান ও পুরুলিয়া জেলা, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, মেদিনীপুর জেলার পশ্চিম অংশ  নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের এই মালভূমি অঞ্চলটি গঠিত হয়েছে।
ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য : অর্কিয়ান  যুগের প্রাচীন রূপান্তরিত শিলা ও কার্বনিফেরাস গের কয়লার স্তর সহ বেলে পাথর, কাদাপাথর, কোয়ার্টজাইট শিলাস্তর দ্বারা এটি গঠিত।

প্রধান পাহাড় সমূহ : এই অংশে অবস্থিত উল্লেখযােগ্য পাহাড়গুলির মধ্যে অযােধ্যা,বাঘমুন্ডি, বিহারীনাথ, শুশুনিয়া, মামা ভাগ্নে প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। অযোধ্যা পাহাড়ের গর্গা বুরুর উচ্চতা ৬৭৭ মিটার যা সমগ্র মালভূমি অঞ্চলের মধ্যে উচ্চতম।।

পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদীর বিবরণ দাও।

উঃ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বহু সংখ্যক নদ-নদী প্রবাহিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদী গুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলাে—
উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলের নদ-নদী:পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে অবস্থিত পার্বত্য অঞ্চল বরাবর যে সব নদীগুলি প্রবাহিত হয়েছে,গুলি হলাে —
(১) তিস্তা ও সিকিমের জেমু হিমবাহ থেকে উৎপন্ন এই নদীটি পশ্চিমবঙ্গের পর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে যমুনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। রঙ্গিত এর প্রধান

(২) জলঢাকা ও সিকিম-ভুটান সীমান্ত থেকে উৎপন্ন এই নদীটি জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যমুনা নদীতে পতিত হয়েছে।
(৩) মহানন্দা এই নদীটি উত্তর দিনাজপুর পশ্চিম সীমান্ত ও মালদহ জেলার মধ্য দিয়ে বাহিত হয়ে বাংলাদেশে পদ্মা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। পুনর্ভবা ও আত্রাই এই দুটি-এর প্রধান উপনদী।

(৪) অন্যান্য : তাের্সা, রায়ডাক, সংকোচ প্রভৃতি পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য প্রধান
 মালভূমি অঞ্চলের নদ-নদী ও

মালভূমি অঞ্চলের উপর দিয়ে যে সব নদী প্রবাহিত হয়েছে সেগুলি হল—

(১) দামোদর ঝাড়খণ্ডের ছোটনাগপুর মালভূমি কামারপাত পাহাড় থেকে উৎপন্ন নদীটি পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হুগলী নদীতে মিলিত হয়েছে।
(২) অজয় ও ছোটনাগপুর মালভূমি থেকে উৎপন্ন এই নদীটি বীরভূম ও বর্ধমান। যার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভাগীরথী মিশেছে।।
(৩) অন্যান্য ও অন্যান্য নদীগুলির মধ্যে রূপনারায়ন, কংসাবতী, দ্বারকেশ্বর, ময়ূরাক্ষী নদী গুলি প্রধান।

সমভূমি অঞলের নদী : ।

সমভূমি অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত উল্লেখযােগ্য নদীগুলি হল—

১) গঙ্গা ও এই নদীটি হিমালয়ে গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়ে দীর্ঘ পথ। প্রবাহিত হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার গিরিয়ার কাছে দুটি ধারায় বিভক্ত হয়েছে। একটি অংশ পদ্মা নামে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ও অপরটি ভাগীরথী-হুগলী নামে। পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।।
| ২) অন্যান্য : পশ্চিমবঙ্গের সর্ব দক্ষিণে বিশেষ করে সুন্দরবন এলাকায় পিয়ালি, । মাতলা, গোসাবা, সপ্তমুখী, ইছামতী প্রভৃতি নদীগুলো প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীগুলো । প্রত্যেকটি পরস্পর, পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত ও এগুলি জোয়ারের জলে পুষ্ট।

পশ্চিমবঙ্গের সারা বছর কী কী ঋতুর আর্বিভাব লক্ষ্য করা যায় ? অথবা, পশ্চিমবঙ্গের ঋতুচক্রের বিবরণ দাও।


উঃ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে সারা বছর ধরে বিভিন্ন ঋতুর পর্যায়ক্রমিক আবর্তন লক্ষ্য করা যায়। প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু উ য় ও আর্দ্র ক্রান্তীয় মৌসুমী প্রকৃতির।

১) গ্রীষ্মকাল মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সময়ে পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্রই উত্তাপ বাড়তে থাকে। মালভূমি অঞ্চলে উত্তাপের পরিমাণ সবচেয়ে বেশী থাকে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে ৩৬ সেলসিয়াস উত্তাপ পরিলক্ষিত হলেও এপ্রিলের শেষ দিকে ৪০° সেলসিয়াস থেকে ৪২ সেলসিয়াস পর্যন্ত উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। এই সময় কলকাতার ৪০° সেলসিয়াস, আসানসোল ৪৫° সেলসিয়াস, জলপাইগুড়ি ও সাগরদ্বীপে ৩৫° সেলসিয়াস ও দার্জিলিং এ  ২০° সেলসিয়াস উত্তাপ অনুভূত হয়।

২) বর্ষাকাল ও জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ ভাগ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা ঋতুর আগমন লক্ষ্য করা যায়। দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমীবায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখার প্রভাবে রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়, গড়ে ১৫৫ সেমি মত। পার্বত্য অংশে বৃষ্টিপাতের গড় পরিমাণ প্রায় ৩০০ সেমি এর মতাে।

৩) শরৎকাল অক্টোবরের প্রথম থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে শরৎ ঋতু বিরাজ করে।।

৪) শীতকাল ও ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র শীতকালীন আবহাওয়া পরিলক্ষিত হয়। পার্বত্য অঞ্চল বাদে অন্যান্য এলাকায় গড় তাপমাত্রা ১৩০। সেন্টিগ্রেড থেকে ১৯° সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত লক্ষ্য করা যায়। দার্জিলিং এর পার্বত্য এলাকায়
কখন কখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায়।

Monday, November 25, 2019

Free Download Abhijit Guha Quantitative Aptitude for Competitive Examinations


Hi readers, Abhijit Guha Quantitative Aptitude Free PDF Book Download everybody knows how competition in competitive exams has improved! Now we must study more and more if we want selection in any exams. Nonetheless, because we're so busy, we can't study much! Every time we have to go out and we can't always take books with us!

So, friends, we have an important pdf-book solution for the exams! Friends ' pdf book is a book is very important and everybody can download any time on your mobile from the internet from this website and after that, you don't need an internet connection on your mobile to read this file! when we search for any important pdf but can't get it because there were many websites they do not have many pdf but we have been collected many pdf so that candidate can get facilities for the competitive exams.so don't wait for it downloads fast and enjoy with this pdf .


Abhijit Guha Quantitative Aptitude Book for Competitive Exams



  1. Area of Plane Figures
  2. Volume and Surface Area of Solid Figures
  3. Elementary Algebra
  4. Linear Equations
  5. Quadratic Equations and In-equation
  6. Progression of quantitative Aptitude PDF
  7. Permutation and Combination
  8. Probability
  9. geometry
  10. Trigonometry
  11. Data Interpretation
  12. Data Sufficiency
  13. Number System
  14. Number Series
  15. HCF and LCM of Numbers
  16. Fractions and Decimals
  17. Allegation and Mixtures
  18. Time, Work and Wages
  19. Pipes and Cisterns
  20. Simple Interest
  21. Compound Interest, Growth, and Depreciation
  22. Time and Distance
  23. Square Root and Cube Roots
  24. Indices and Surds
  25. Vedic Mathematics
  26. Simplification and Approximation
  27. Problems on Ages and Numbers
  28. Percentage
  29. Profit, Loss, and Discount
  30. Average
  31. Ratio and Proportion
  32. Partnership and Share
  33. Trains
  34. Boats and Streams
  35. Races
  36. Clocks
  37. Calendar





Name of the book-Abhijit Guha Quantitative Aptitude

Author-Arun Sharma
Pages-588


Version-English
Quality-Excellent
Format-PDF
Size-20 MB

Name of the book
Abhijit Guha Quantitative Aptitude
Quality
Excellent
Format
PDF
Size
20 MB
Author
Arun Sharma
Pages
588
Version
English
click here to download Abhijit Guha Quantitative Aptitude for Competitive Examinations Book Free Download

Saturday, November 23, 2019

Objective General English Book for SSC & Bank Exams

 Objective General English Book for SSC & Bank Exams


Hello, Dear Readers, Download the most important book for SSC & BANK Examinations in the English version. SSC, BANK, which is an important book for Cracking Examinations, is a useful book in English. Objective General English for SSC & Bank Examinations is sharing with you, Afterwards, there will also be questions of an objective type which you can also read for you growth on educational preparation.


This book contains the following chapter with page number

1.Grammar— Basic Concepts & Common Mistakes  1-26
2.Active & Passive Voice                                     27-36
3.Direct & Indirect Speech                                  37-44
4.Clause Analysis                                              45-54
5.Synthesis of Sentences                                     55-64
6.Transformation of Sentences                             65-74
7.Idioms and Phrases                                          75-88
8. Spotting Errors                                               89-108
9.Sentence Correction                                         109-130
10. Choosing the Correct Sentence                       131-148
11.Vocabulary — Word Bank                              149-174
12Word Power                                                   175-208
13. Relationship-Based Problems                         209-218
14. Fill in the Blanks (FIB)                                 219-244
15. Cloze Test                                                    245-260
16. Parajumbles                                                  261-306
17. Paragraph Completion                                   307-334
18. Reading Comprehension                                335-451


Details of Disha Publication English Book-

File Type – PDF
Size – 17 MB
Version- English
Total Page – 455



Monday, November 18, 2019

Quantum CAT Book (Quantitative Aptitude)

Quantum CAT Book (Quantitative Aptitude)

Quantum CAT Book (Quantitative Aptitude)

Hi, dear readers, I will share a useful, time saving book "Quantum CAT Book" in this article. The main topic in these books is mathematics which is the most time-consuming subject in almost all competitions. In all the exams, the time limit is set so as to improve your result, the shorter you use it. The book is excellent Students who are preparing for SSC MTS, CHSL, CGL, CPO, LIC ADO, CDS, State PCS, AIRFORCE, etc. Both lessons with simple language and limited time will be done in this book. Ultimately, this was solved in the easiest way.
Quantum CAT Book – 

  1. CI/SI/Instalments
  2. Time, Speed and Distance
  3. Time and Work
  4. .Profit, Loss, and Discount
  5. Averages
  6. Allegations
  7. Ratio, Proportion & Variation
  8. Percentages


  1. Number of File -2
  2. Size – 36 MB
  3. Language – English
  4. Details Of Quantum CAT Book(Quantitative Aptitude) Book
  5. File Type – PDF


Pages – 118
Credit –Arihant Publication

Tuesday, November 12, 2019

Paramount Geography Book PDF

Paramount Geography Book PDF


Paramount Geography Book PDF: Dear Readers, I'm sharing in this post a very useful book "Paramount Geography Book PDF" and Geography Details for you here. Include in this book the general knowledge of competing tests, the maximum number of geography questions asked in different examinations. Several chapters are contained in this book.


Because of its good study book, general knowledge is part of almost any competitive review. Paramount Geography book PDF, all lessons are explained in plain language in this book. Especially for students studying for SSC CHSL, CGL, Delhi Bank Police, UPSC, State Exam, Railway, etc. recruitment tests. In addition to this, we downloaded another General Knowledge Book you will see it as well. Paramount Geography Book PDF For each book, press the link to download pdf of this book, directly on your phone or pc.

Paramount Geography book PDF Content

1.Our Solar System
2.Major Rivers of the World
3.Important Lakes of the World
4.Major Gulfs of The World
5.Major Peninsulas of the World
6.Oceans of the World
7.Important Straits of the World
8.Major Lakes
9.Smallest and Biggest Countries
10.Important Cities on River Banks
11.Important Tribes
12.Major Forests and Grasslands
13.Mountain of India
14.The Plains
15.Important Points

Details of this book-Paramount Geography book PDF

File Type  – PDF
Size   – 47 Mb
Language  – English
Pages   – 50
Credit  – Paramount Publication

RS Agarwal Non-Verbal AND Verbal Reasoning Book

 RS Agarwal  Non-Verbal  AND  Verbal Reasoning Book



Hello Dear Readers, I share with you in this post the very important Reasoning book "RS Agarwal Verbal & Non-Verbal Reasoning Book." This book, like the RS Agrawal Math Book (new arithmetic: Dr. R. S. Agrawal), is a very simple and useful book for learning math. The two parts of the Reasoning (Verbal & Nonverbal) are best described. Students preparing for the SSC GD, MTS, CHSL
RS Agarwal Verbal & Non-verbal Reasoning Book-This book is for non-coaching students. This Pdf explained the entire chapter with the first idea, then the exercise, the second exercise, the answer to all questions, with full explanation, which is included certainly in the features of a good book.

Book RS Agarwal Verbal & Nonverbal Reasoning - This includes all the chapter as follows.
1.Analogy
2.Classification
3.Series completion
4.Coding-Decoding
5.Blood Relations
6.Puzzle Test
7.Sequential Output Tracing
8.Direction Sense Test
9.Logical Venn diagrams
10.Alphabet Test
11.Number, Ranking & Time Sequence Test
12.mathematical Operations
13.Logical Sequence of Words
14.Arithmetical Reasoning
15.Data Sufficiency
17.Decision Making
18.Assertion and Reason
19.Situation Reaction Test
20.Verification of truth of the Statement


Part 2: Non-Verbal Reasoning
1.Series
2.Analogy
3.Classification
4.Analytical Reasoning
5.Mirror Images
6.Water Images
7.Embedded Figures
8.Completion of Incomplete Pattern
9.Figure Matrix
10.Paper Folding
11.Paper Cutting
12.Rule Detection
13.Grouping of Figures
14.Cubes and Dice
15.Dot Situation
16.Practice Question Set

Pages – 906
Language – English
Credit – S. Chand & Company
Details RS Agarwal Verbal & Non-verbal Reasoning Book
File Type – PDF
Size – 29 MB

Saturday, November 9, 2019

Free Download Objective English Book

Free Download Objective English Book

Hi, today's we have brought to you all the PDF file of Hari Mohan Prasad's Objective English for Competitive Examination. Tata McGraw Hill Education Pvt has released this book. In 2009 it was initially disclosed to Ltd. The book was published in 2013 for the fourth time. those students studying this book will help you to take IBS, IBPS PO, UPSC, CAT, SSC, SSC CGL, etc. to take a benchmark test.


The book complies with all aspects of English and it is divided into two categories. Section one includes the theory behind associate degree understanding paths, applies grammar by mistakes, context and also sentence, paragraph fills, phrase skills, vocabulary building, phrase reconstruction, and dropping inequality. Section 2 of the book contains a sample for the practice of taking a look at papers. All sample questions in the section are objective varieties and are presented in book patterns so that grammar can be practiced while the idea is being learned. This way, once a student learns through this book, he's ready to practice a lot during the study.


PART2:APPLYING GRAMMAR


  1. Spotting Errors
  2. Spotting Errors – Variation Pattern – I
  3. Spotting Errors – Variation Pattern – II
  4. Spotting Errors – Variation Pattern – III
  5. Spotting Errors – Variation Pattern – IV
  6. Sentence Improvement
  7. Voice
  8. Prepositions

PART1COMPREHENDING PASSAGES


  1. Objective Comprehension – I
  2. Objective Comprehension – II
  3. Objective Comprehension – III

PART3:FILL IN THE PARAGRAPH GAPS

Cloze Test or Numbered Gaps

PART4SENTENCE SKILLS

Sentence Completion
Sentence Fillers

PART5BUILDING VOCABULARY


  1. Vocabulary Test – Synonym
  2. Vocabulary Test – Antonym
  3. Vocabulary Test – Special Type – I
  4. Vocabulary Test – Special type – II
  5. Miscellaneous Vocabulary
  6. Idioms and Phrases
  7. Substitution

PART6:SENTENCE RECONSTRUCTION


  1. Reconstruction
  2. Sentence Reconstruction rules: Sentence Arrangement, Jumbled Sentences, and Paragraph 

PART7:ANALOGY

Wednesday, November 6, 2019

Download general knowledge book for railway recruitment board assistant loco pilot

Download general knowledge book for railway recruitment board assistant loco pilot:Hello readers, I'm going to tell you today such a best book for railway selection board assistant loco pilot / rail examination relevant general knowledge book pdf with this book includes a lot of general knowledge that is essential for railway examinations so I suggested that you can read it. In every rail selection board assistant loco pilot competitive examination, this general knowledge is most important


Download general knowledge book for railway recruitment board assistant loco pilot
.
So you're learning and remembering them well. If this post is a bit longer, I suggest you save this pdf-file and read it well whenever you get the time because these questions matter. You should upload this to your phone or PC and read it!nearly every new pdf-book is uploaded every day! So continue to visit our site regularly and download the Daily New E-Book! Through clicking on the link below, you can download all these e-books!



The content of this pdf book
  1. Geography
  2. life science
  3. physical science
  4. political science
  5. International General Knowledge
  6. Indian general knowledge
  7. History



Free! Download 90+ Important pdf books

Free! Download 90+ Important pdf books

Hello Readers, Download 90+ books. All files are available in pdf format.you can download from the below link. Here 90+ books and more 50 books link available. Please comment if any book problem with downloading.